শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম:
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর বাড়িয়ে বিজ্ঞপ্তি ডিএনএ রিপোর্ট প্রস্তুতকারীকে সাক্ষ্য প্রদান সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশনা এবং সাক্ষ্য আইন: আমাদের করনীয় শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত উত্তরায় কাজী ড্রাইভিং স্কুলের উদ্যোগে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত শেখ রাসেলের ৬১তম জন্মদিন পালনের আহ্বান আ.লীগের ৩ দিনব্যাপী জলবায়ু অর্থায়ন, প্রকল্প ধারণাপত্র ও আর্থিক প্রস্তাবনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত জনগনের সেবায় নিয়োজিত বোয়ালিয়া পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তারা বাংলাদেশ ক্লাইমেট অ্যাকশন ফোরাম ২০২৪ অনুষ্ঠিত লোভ লালসার ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের কল্যাণে সারাজীবন কাজ করেছি : আলাউদ্দিন নাসিম মুলাদীর বোয়ালিয়া নির্বাসী ইয়াছিন হাওলাদারের পরিবার মেজবাহ উদ্দিন গংদের হয়রানীর শিকার মুলাদীর বোয়ালিয়ার জুলেখা বেগম জমি বিক্রি করে প্রতি পক্ষ জাফর ও আমির কর্তৃক হয়রানির শিকার

বায়ুদূষণে ধুঁকছে ঢাকা

>> বায়ুদূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো ইটভাঁটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণকাজের ধুলো
>> প্রতিনিয়ত বাড়ছে অ্যাজমা, নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা
>> গর্ভপাত, জন্মত্রুটি, শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশেও বড় ধরনের বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বায়ুদূষণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বায়ুদূষণের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে ঢাকা। দিনের পর দিন অস্বাস্থ্যকর থাকছে রাজধানী ঢাকার বাতাস। গতকাল বুধবার বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (আইকিউএয়ার) সূচক থেকে জানা যায়- টানা তিন দিন ধরেই বিশ্বের ১১০ শহরের মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ঢাকা। বুধবার ঢাকার বায়ুর মানের স্কোর ছিলো ১৮২ অর্থাৎ বায়ু ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে। স্কোর শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ভালো বলে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয় ধরা হয় বায়ুর মান। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়। এছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।

বর্তমানে অনেক জেলা শহরেও দূষণ অতিরিক্ত ঝুঁকির পর্যায়ে পৌঁছেছে। রাজধানী ঢাকাকে ছাড়িয়ে গেছে রংপুর-সিলেটের মতো কিছু শহর। বায়ুদূষণে অ্যাজমা, নিউমোনিয়ার মতো রোগীর সংখ্যা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। তাছাড়া গর্ভপাত, জন্মত্রুটি, শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশেও বড় ধরনের বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বায়ুদূষণ। ব্রঙ্কাইটিস, ফুসফুসে প্রদাহ, নিউমোনিয়াসহ ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। ঢাকার শ্যামলীর টিবি হাসপাতালে গত নভেম্বরে ৯ হাজারের বেশি রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন, যা গত বছরের চেয়ে বেশি। অন্তত দুই যুগ আগে ঢাকার বায়ুদূষণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আলোচনায় আসে।

সরকার ব্যাপক তোড়জোড় করে রাজধানী ঢাকার ডিজেলচালিত যানগুলো সিএনজিতে রূপান্তরের উদ্যোগ নেয় বায়ুদূষণ কমানোর জন্য। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ করা হয় ক্ষতিকর ধোঁয়া থেকে পরিবেশ রক্ষার জন্য। তারও আগে থেকে মোটরযান অধ্যাদেশ-১৯৮৩ আইন হয়। এসব বিধি অনুযায়ী কালো ধোঁয়া নির্গত করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তবু ভিড়ের মধ্যে কালো ধোঁয়া ছেড়ে দাপিয়ে বেড়ায় গাড়ি। শহরজুড়ে ছোটখাটো কারখানা আর শহরের পাশের ইটের ভাঁটাও চলছে। তা ছাড়া বিভিন্ন খোলা জায়গায় এবং রাস্তার পাশে নির্মাণসামগ্রী রাখায় ধুলো ছড়ায়, যা বায়ুদূষণের আরেকটি প্রধান কারণ।

গবেষকরা বলছেন, রাসায়নিক বিভিন্ন দূষণের কারণে অণুজীব বা ব্যাকটেরিয়াল বায়ুদূষণ বাড়ছে রাজধানীতে। এতে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে বাতাসে, যা উন্মুক্তভাবে বর্জ্য ফেলে রাখার কারণে ছড়ায়। শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালির সঙ্গে মানুষের গলায় ঢুকে ইনফেকশন তৈরি করছে। এ কারণে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি, বলছেন গবেষকরা। একই সঙ্গে গর্ভপাত, জন্মগত ত্রুটি, শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে বায়ুদূষণ।

বায়ুদূষণের মূল কারণ হলো- বিভিন্ন খোলা জায়গায় এবং রাস্তার পাশে নির্মাণসামগ্রী রাখায় ধুলো ছড়ায়। তা ছাড়া উন্মুক্তভাবে নির্মাণকাজের সময়ও ধুলো ছড়ায়। কালো ধোঁয়া আর ধুলো ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান কারণ বলে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন। এ বিষয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে সমালোচনা হলেও যারা পদক্ষেপ নেবেন তাদের সক্রিয় দেখা যায় না। বাংলাদেশ সরকার বরং দূষণের মাত্রা কমিয়ে দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ২০১৯ সালের মার্চে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ঢাকার বায়ুদূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো ইটভাঁটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণকাজের ধুলো।

বাংলাদেশের একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন (ও৩)। ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়নকেন্দ্র (ক্যাপস) বলছে, ২০২২ সালের কোনো মাসেই বায়ুর মান ১০১ একিউআইয়ের নিচে ছিল না; গড় বায়ুমান ছিল ১৫৪.৯৭ একিউআই, অর্থাৎ ‘অস্বাস্থ্যকর’। ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রত্যেক মাসে বায়ুর গড় স্কোর ছিল ১৯৪.৮৩ থেকে ২২১ একিউআইয়ের মধ্যে, অর্থাৎ মানুষের সহনশীল মাত্রার চেয়ে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’। ২০২২ সালে বর্ষাকালে বায়ুর মান ছিল ১০৫ একিউআইয়ের ওপরে, অর্থাৎ অস্বাস্থ্যকর ছিল।

 

অন্যদিকে ২০২২ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে বায়ুর মান ছিল যথাক্রমে ১৭৬.২৩ ও ২৪৪.৪৪ একিউআই এবং ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে দুই দিন ছিল ৩১৭.৪৪ ও ৩০২.৫৪ একিউআই এবং এক দিন ৪০৪.৪৪ একিউআই হয়, যা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 ithostseba.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com